Menu

ব্রিটিশ ভারতের মধ্যবিত্ত শ্রেণির বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর

ব্রিটিশ ভারতের মধ্যবিত্ত শ্রেণির বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর

ভূমিকা

পাশ্চাত্য শাসনের অন্যতম ফসল ভারতীয় মধ্যবিত্ত শ্রেণি। মধ্যবিত্ত শ্রেণির কিছু সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। যেমন—

(১) উচ্চবর্ণের হিন্দুদের প্রাধান্য

ব্রিটিশ শাসনাধীনে ভারতে যে মধ্যবিত্ত শ্রেণির বিকাশ ঘটেছিল তার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই ছিল উচ্চবর্ণের হিন্দু। সরকারি চাকরির বেশিরভাগই ব্রাহ্মণ, কায়স্থ, বৈদ্য ও ক্ষত্রিয়দের দখলে ছিল। সরকারি চাকরিতে মুসলিম ও নিম্নবর্ণের হিন্দুদের সংখ্যা ছিল খুবই কম।

আরো পড়ুন :  ধর্মসংস্কার ও জাতীয়তাবাদের প্রসারে স্বামী বিবেকানন্দ ও রামকৃষ্ণ মিশনের ভূমিকা আলোচনা কর

(২) পাশ্চাত্য শিক্ষা গ্রহণ

ঔপনিবেশিক আমলে ভারতের মধ্যবিত্ত শ্রেণির অন্যতম বৈশিষ্ট ছিল পাশ্চাত্য শিক্ষাগ্রহণে তাদের আগ্রহ।

(৩) আর্থিক সংগতি

মধ্যবিত্ত শ্রেণির অর্থনৈতিক অবস্থা যথেষ্ট সচ্ছল ছিল। কেউ কেউ ছিলেন যথেষ্ট ভূসম্পত্তির মালিক, বড়ো ব্যবসায়ী।

(৪) সংখ্যায় স্বল্পতা

ব্রিটিশ আমলে মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংখ্যা দেশের সমগ্র জনসংখ্যার তুলনায় খুবই সামান্য ছিল।

(৫) কর্মহীনতা

ভারতের এই শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণি প্রধানত ব্রিটিশদের অধীনে চাকুরি করে জীবিকা নির্বাহ করত। কিন্তু এই সম্প্রদায় পরবর্তীকালে কর্মহীনতার মুখোমুখি হয়। যোগ্যতা থাকলেও ভারতীয় মধ্যবিত্তরা নিম্নপদের চাকুরিগুলিতে নিযুক্ত হতে বাধ্য হত।

আরো পড়ুন :  শিক্ষাবিস্তারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান লেখ

(৬) শহরকেন্দ্রিকতা

কোম্পানির শাসনকালে ভারতে বহু নতুন শহরের প্রতিষ্ঠা হয়। এই শহরগুলিকে কেন্দ্র করেই পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ঘটে এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির উদ্ভবের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়।

(৭) জাতীয় আন্দোলনের মেরুদণ্ড

ভারতীয় মধ্যবিত্ত শ্রেণি পরবর্তীকালে ব্রিটিশবিরোধী জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মেরুদণ্ড হয়ে দাঁড়ায়। এজন্য এ. আর. দেশাই ভারতের মধ্যবিত্তদের ‘আধুনিক ভারতের স্রষ্টা’ বলে অভিহিত করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!