Menu

শিল্প ও পুঁজিবাদী মূলধন সম্পর্কে লেখ

Last Updated on December 26, 2022 by বাংলা মাস্টার

শিল্প ও পুঁজিবাদী মূলধন সম্পর্কে লেখ

শিল্প মুলধন

অষ্টাদশ শতকের মধ্যভাগ থেকে মার্কেন্টাইল মতবাদ ইউরোপে জনপ্রিয়তা হারাতে থাকে। এই সময় ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথের নেতৃত্বে এক নতুন অর্থনৈতিক চিন্তা ইউরোপে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

এক শ্রেণির বণিকদের হাতে বিপুল পরিমাণ অর্থসম্পদ জমা হয় এবং এই মুলধন শিল্প ও বাণিজোর নতুন নতুন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করে। এভাবে ইউরোপে এক ধরনের পুঁজিপতি বা মূলধনি শ্রেণির উদ্ভব ঘটে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে মুনাফা অর্জন করার লক্ষ্য নিয়ে যে পুঁজি বিনিয়োগ করা হয় তা সাধারণভাবে শিল্প মূলধন নামে পরিচিত।

পয়েন্ট সমূহ

বিস্তারিত আলোচনা

[১] পুঁজিপতিদের উদ্ভব

ইউরোপে শিল্পবিপ্লবের ঘটনা পুঁজিবাদের উদ্ভব ঘটায়। ইংল্যান্ডে ১৭৬০-৮০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ শিল্পবিপ্লবের সূচনা হলেও এর দ্রুত প্রসার শুরু হয় ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দের পর। শিল্পবিপ্লবের ফলে ইউরোপের দেশগুলিতে বিরাট সম্পদ ও মুলধনের সৃষ্টি হয়। মুষ্টিমেয় মানুষের হাতে এই সম্পদ কেন্দ্রীভূত হলে তারা পুঁজিপতি শ্রেণি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এভাবে ইউরোপে পুঁজিবাদ বা ধনতন্ত্রের উদ্ভব ঘটে।

[২] পণ্য বিক্রয়

উনবিংশ শতকে ইউরোপে শিল্পোৎপাদন অত্যন্ত বৃদ্ধি পায়। নিজ দেশের চাহিদা মেটানোর পরও বহু পণ্য উদবৃত্ত থেকে যায়। এসব উদ্বৃত্ত শিল্পপণ্য বহুগুণ বেশি দামে বিক্রির জন্য এশিয়া, আফ্রিকা ও আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলের বাজারে পাঠানো হয়। এভাবে উপনিবেশগুলি ইউরোপীয় শিল্পপণ্যের বিরাট বাজারে পরিণত হয়।

আরো পড়ুন :  ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রে জাতি-প্রশ্নের সদর্থক ও নঞর্থক প্রভাবগুলি কী ছিল

[৩] কাঁচামাল সংগ্রহ

ইউরোপে শিল্পোৎপাদনের কাজ অব্যাহত রাখার জন্য প্রয়োজন ছিল কারখানাগুলিতে নিয়মিত তুলো, রেশম, রবার, উদ্ভিজ তেল, বিভিন্ন খনিজ পদার্থ প্রভৃতি কাঁচামালের জোগান অব্যাহত রাখা। ধনতান্ত্রিক দেশগুলি কাঁচামাল রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে নিজেদের উপনিবেশ গড়ে তোলে।

[৪] পুঁজি বিনিয়োগ

ইউরোপের বিভিন্ন দেশের পুঁজিপতিরা নিজেদের বিপুল পরিমাণ পুঁজি বিনিয়োগ করে অতিরিক্ত মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে এশিয়া, আফ্রিকা ও আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলে সক্রিয় হয়ে ওঠে। এর ফলে এশিয়া, আফ্রিকা ও আমেরিকা মহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল শীঘ্রই ইউরোপের বিভিন্ন দেশের উপনিবেশে পরিণত হয়।

[৫] উপনিবেশের প্রসার

পুঁজিবাদের চূড়ান্ত পরিণতি হলো  সাম্রাজ্যবাদ। অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের স্বার্থে, পণ্য বিক্রির বাজার তৈরি করতে উপনিবেশ প্রসার বহুগুণ বৃদ্ধি পায়।

আরো পড়ুন :  জাতিগত প্রশ্ন সম্পর্কে লেখ

বিচ্যুতি-সীমাবদ্ধতা

১। এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় সম্পদ মুষ্টিমেয় মানুষের হাতে জমা হয়।

২। শিল্প ও পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার চুড়ান্ত পরিণতি হল সাম্রাজ্যবাদ।

৩। পুঁজিপতিদের উদ্যোগে উপনিবেশগুলিতে বিদেশি পণ্যে বাজার ছেয়ে গেলে দেশীয় হস্ত ও কুটির শিল্প ধ্বংস হয়। প্রভৃতি।


দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের সূচিপত্র

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!