Menu

হবসন-লেনিন থিসিসের সীমাবদ্ধতা উল্লেখ কর | এই তত্ত্বের গুরুত্ব লেখ

হবসন-লেনিন থিসিসের সীমাবদ্ধতা উল্লেখ কর | এই তত্ত্বের গুরুত্ব লেখ

সাম্রাজ্যবাদের প্রসারে শিল্পোনত ও পুঁজিবাদী দেশগুলি কর্তৃক কাঁচামাল সংগ্রহ, বাজার দখল,  বিনিয়োগের ক্ষেত্র অনুসন্ধান প্রভৃতি বিষয়গুলির যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও হবসন-লেনিন প্রদত্ত ব্যাখ্যা সম্পূর্ণ দোষমুক্ত ছিল না। বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে এই মতবাদের সমালোচনা করা হয়। যেমন—

[১] উদবৃত্ত পুঁজির সমগ্র অংশই এশিয়া বা আফ্রিকার উপনিবেশগুলিতে লগ্নি করা হয়নি। ইংল্যান্ড, ফ্রান্স প্রভৃতি সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলি তাদের মূলধনের বেশিরভাগটাই রাশিয়া ও দক্ষিণ আমেরিক বিনিয়োগ করেছিল—যেগুলি তাদের উপনিবেশ ছিল না।

আরো পড়ুন :  সাম্রাজ্যবাদ ও উপনিবেশিকতাবাদের প্রসারের কারণ আলোচনা কর

[২] শিল্পবিপ্লব ও পুঁজিবাদী অর্থনীতির উদ্ভব ও বিকাশ ঘটে উনিশ শতকে। অথচ তাঁর আগে কেন উপনিবেশের উদ্ভব ঘটল তার কোনো ব্যাখ্যা হবসন বা লেনিনের তত্ত্বে পাওয়া যায় না।

[৩] লেনিন মনে করতেন যে, শিল্পোন্নত সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলির শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান অনেকটাই ভালো ছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় যে, ডেনমার্ক, সুইডেন প্রভৃতি দেশের কোনো উপনিবেশ ন থাকা সত্ত্বেও এসব দেশের শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মনে যথেষ্ট উন্নত ছিল। সেই তুলনায় উপনিবেশিক রাষ্ট্র ফ্রান্স ও বেলজিয়ামের শ্রমিকদের অবস্থা অনেক খারাপ ছিল।

আরো পড়ুন :  জাতিগত প্রশ্ন সম্পর্কে লেখ

[৪] বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, ঔপনিবেশিক শোষণ নয়, সুসম্পর্কের দ্বারাই অধিক পরিমাণ পুঁজি বিনিয়োগ করা সম্ভব। কিন্তু হবসন-লেনিনের তত্ত্বে এই সুসম্পর্কের গুরুত্বের উল্লেখ পাওয়া যায় না।

[৫] ডেভিড টমসন সাম্রাজ্যবাদের প্রসাবের লেনিনের তত্ত্বকে মৌলিক ও সম্পূর্ণ বলে মনে করেন না।

গুরুত্ব:

সাম্রাজ্যবাদের ব্যাখ্যায় হবসন ও লেনিনের মতবাদে বিভিন্ন ত্রুটিবিচ্যুতি থাকলেও এই মতবাদের গুরুত্বকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করা যায় না। সাম্রাজ্যবাদের ব্যাখ্যা হিসেবে এই তত্ত্ব নতুন দিগন্তের উন্মোচন করে। সাগরপারে বিনিয়োগ যে ইউরোপের শিল্পোন্নত দেশগুলির প্রধান লক্ষ্য ছিল তার প্রমাণ মেলে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পূর্ব পর্যন্ত এই অঞ্চলে তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ থেকে। ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি প্রভৃতি দেশগুলি এই সময়ের মধ্যে এই অঞ্চলে প্রায় ত্রিশ হাজার মিলিয়ন ডলার পুঁজি বিনিয়োগ করেছিল।

আরো পড়ুন :  শিল্প ও পুঁজিবাদী মূলধন সম্পর্কে লেখ

দ্বাদশ ইতিহাসের সূচিপত্র

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!